শোবিজ তারকাদের নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক, গুঞ্জন কিংবা সমালোচনা থাকে। কিন্তু কিছু তারকা আছেন যারা খুবই সাবধানে পা ফেলেন যাতে কোন বিতর্ক তাকে স্পর্শ করতে না পারে।
২০১৩ সালে অভিনয় জগতে পা রাখা সাফা কবির তেমনি একজন শিল্পী। তিনি পুরো ক্যারিয়ারে নির্ভেজাল একটি ইমেজ নিয়ে কাজ করে আসছিলেন। তবে ২০১৯ সালের দিকে এই তারকার একটি মন্তব্য তার সেই ফ্রেশ ইমেজে দাগ লাগিয়ে দেয়। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যে জিনিস চোখে দেখি না তাতে আমি বিশ্বাসও করি না।
এরপর একদল নেটিজেন সাফা কবিরকে ‘নাস্তিক’ আখ্যা দেয়। সে সময় এটি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সামলোচনা হয়েছিল। সাফা অবশ্য পরে বলেছিলেন, সবাই কথাটিকে যেভাবে নিয়েছে তিনি আসলে সেভাবে বলতে চাননি। কিন্তু নেতিবাচক জিনিস যেভাবে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করে ইতিবাচক জিনিস সেটা করতে পারে না। তাই সাফার মনোভাব কী সেটা সেভাবে কেউ গ্রহণও করেনি।

তাইতো এতো বছর পর এসেও এই অভিনেত্রীকে সেই মন্তব্যের জন্য কটাক্ষের শিকার হতে হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অথচ এই অভিনেত্রী সম্প্রতি ওমরাহ পালন করে এসেছেন। সমাজের চাপে তিনি সেটা করলে সবাইকে ঢাক ঢোল পিটেয়ে জানান দিতেন, কিন্তু তিনি ধর্মকে বরাবরই নিজের মধ্যেই রাখতে চেয়েছেন। তাই হজ পালনের কথা নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলোতেও জানাননি।
সম্প্রতি সাফা একটি পডকাস্টে অতিথি হিসেবে হাজির হলে সঞ্চালক তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি পরকালে বিশ্বাস করেন?’ সাফা বেশ বিব্রত এবং বিরক্ত হন এতো বছর পর সেই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে। তারপরও তিনি বলেন, ‘আমার মনেও নেই তখন কী বলেছিলাম। অথচ মানুষ সেটা নিয়েই পড়ে আছে। অনেক ছোট বেলায় একটা কথা আমি বলেছিলাম, যা আমি ওইভাবে বলিনি, কিন্তু শুনতে অন্যরকম লেগেছে। যেটা অনেক বড় আকার ধারন করে। আমি যতোবার দুঃখ প্রকাশ করেছি না কেন, আমাদের দেশের মানুষের মানসিকতাটাই এমন যে তারা নেতিবাচক জিনিসটাকে ধরে রাখে বেশি। ইতিবাচক বিষয়কে গুরুত্ব দেয় না। আমি যতোবারই বলেছি যে আমি নাস্তিক নই, একবারও সেটা কেউ বিশ্বাস করেনি।’

এরপর তিনি বলেন, ‘আমাকে তো কটাক্ষ করেছেই। কিন্তু আমার বাবা মায়ের নাম বদলে দিয়ে অন্য একজনের মেয়ে বানিয়ে দিলো ওরা। এটা আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে যে, আমার বাবা মা আমার জন্য সমাজে এভাবে উপস্থাপিত হলেন। আমার নাম সাফা করিম বলা হলো। আমি এতোদিন ধরে কাজ করছি, আমার নামটাও যদি ভুল বানিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আর কী বলার আছে?’

সাফা আরও বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, আমি তখন যা বলেছিলাম সেটাকে মানুষ ভিন্নভাবে নিয়েছে। ফলে আমাকে অনেকে নাস্তিক বলেছে। কিন্তু একান্তভাবে আমি জানি আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে আমার যোগাযোগটা কেমন। কিছু বিষয় খুবই ব্যক্তিগত, আমার ধর্ম, আমি কী করি, আমার ব্যক্তিগত জীবন। আমি এগুলো সব সময় আড়ালে রাখতে চাই।’

