জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টন মোড়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ৮ দলের যৌথ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াত আমির বলেন, “যারা জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে নারাজ, তাদের জন্য ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন নেই। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে। জুলাই সনদের আইনগত স্বীকৃতি ছাড়া কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। যারা জুলাইয়ের চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তারা কিভাবে জাতীয় নির্বাচনে জনগণের মতামতকে সম্মান জানাবে?”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। জুলাই সনদে জনগণের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের দাবি পূরণ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
পাঁচ দফা গণদাবি ও গণভোটের দাবি
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সাংবিধানিক সংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কেবল গণভোটের মাধ্যমেই সম্ভব। অন্যথায় জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনগত স্বীকৃতি প্রদানসহ পাঁচ দফা গণদাবিই আজকের এই জনসমাবেশের মূল উদ্দেশ্য।”
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “অনেকে বলেন সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই। তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে সংবিধান সংশোধন করে গণভোটের ধারা বাতিল করেছিলেন শেখ হাসিনা। এখন যারা বলেন গণভোটের বিধান নেই, তারা কি তাহলে হাসিনার কথাই বলছেন?”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধানে লেখা আছে প্রতি পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন হবে। ২০২৪ সালে যদি নির্বাচন হয়, তবে ২০২৬ সালে নির্বাচন হওয়ার বিধান কোথায় লেখা আছে? সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৯ সালে।”
আট দলের অংশগ্রহণ
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি অংশ নেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি।
সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, “জুলাই সনদ জনগণের মুক্তি ও রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের রূপরেখা। এর আইনি ভিত্তি না থাকলে ভবিষ্যৎ নির্বাচন বৈধতা হারাবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো এখন জুলাই সনদকে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে চাইছে। নির্বাচনের আগে এই ইস্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি করতে পারে।
